জীবন ঘনিষ্ট ইসলামিক প্রশ্নোত্তর (পর্ব -০৯) || স্বামী নিখোঁজ হলে করণীয় || ইদ্দতকালে কর্মস্থলে যাওয়া || বিদেশে থাকা অবস্থায় বিধবা হলে ||
ইদ্দতকালে কর্মস্থলে যাওয়া
ইদ্দত পালনের সময় বিধবা কি ছাত্রী হলে বিদ্যালয়ে অথবা চাকুরে হলে চাকুরিস্থলে যেতে পারবে?
যে কাজে যাওয়া জরুরী, সে কাজে যাওয়া চলবে। ৬০৬ (মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম)
বিদেশে থাকা অবস্থায় বিধবা হলে
বিদেশে থাকা অবস্থায় বিধবা হলে মহিলা কোথায় ইদ্দত পালন করবে?
যে ঘরে থাকা অবস্থায় স্বামী মারা গেছে, সে ঘরেই ইদ্দত পালন করতে হবে। অবশ্য সেখানে যদি দেখাশোনা করার কেউ না থাকে, তাহলে শ্বশুরবাড়ি অথবা মায়ের বাড়িতে ফিরে গিয়ে ইদ্দত পালন করতে পারবে। ৬০৭ (লাজনাহ দায়েমাহ)
বাবা মায়ের বাড়িতে থাকাকালে বিধবা হলে ইদ্দত
স্বামী মরার সময় স্ত্রী মায়ের বাড়িতে ছিল। সে কোথায় ইদ্দত পালন করবে?
নিজের স্বামীগৃহে ফিরে এসে ইদ্দত পালন করবে। ৬০৮ (ইবনে উষাইমিন)
স্বামী নিখোঁজ হলে করণীয়
কোন স্ত্রীর স্বামী নিখোঁজ হলে করণীয় কি?
কোন মহিলার স্বামী নিখোঁজ হলে নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে পূর্ণ চার বছর অপেক্ষা করার পর আর চার মাস দশ দিন স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত পালন করে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করতে পারবে। এই নির্ধারিত সময়ের পূর্বে তার বিবাহ হারাম। বিবাহের পর তার পূর্বস্বামী ফিরে এলে তার এখতিয়ার হবে; স্ত্রী ফেরত নিতে পারে অথবা মোহর ফেরত নিয়ে তাকে ঐ স্বামীর জন্য ত্যাগ করতেও পারে। ৬০৯ (মানারুস সাবীল ২/৮৮ পৃঃ)
স্ত্রী চাইলে আর নতুনভাবে বিবাহ আকদের প্রয়োজন নেই। কারণ, স্ত্রী তারই এবং দ্বিতীয় আকদ তার ফিরে আসার পর বাতিল। তবে তাকে ফিরে নেওয়ার পূর্বে ঐ স্ত্রী (এক মাসিক) ইদ্দত পালন করবে। ৬১০ (ইউঃ ২/৭৬৬) গর্ভবতী হলে প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর সে সময়ে দ্বিতীয় স্বামী থেকে পর্দা ওয়াজেব হয়ে যাবে।
এক মহিলার দুধ বেটা ছাড়া আর কেউ নেই। সে মারা গেলে কি ঐ বেটা তার ওয়ারেস হবে?
না। কারণ দুধ পান করলে দুধের আত্নীয়তা কায়েম হয় ঠিকই, কিন্তু মীরাসের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় না। সুতরাং সেই মহিলার সম্পত্তি বায়তুল মালে জমা হবে।৬১১ (ইবনে উষাইমীন)
আমি বৃদ্ধ মানুষ। আমার ভয় হয়, আমার মৃত্যুর পর জমি সম্পত্তি নিয়ে ছেলেরা ঝগড়া ঝামেলা করবে। সুতরাং আমি কি এখন আমার স্থাবর অস্থাবর সকল অর্থ সম্পত্তি মীরাসের ভাগ বণ্ঠন অনুযায়ী প্রতেকের নামে লিখে দিতে পারি?
আপনার এ কাজ ঠিক হবে না। কারণ আপনি জানেন না যে, কে কখন মারা যাবে। হতে পারে আপনার কোন ওয়ারেসেরই আপনি ওয়ারেস হবেন। সুতরাং আপনার মৃত্যুর পর আপনার ছেলে মেয়েরা শরয়ী মীরাস অনুযায়ী বিলি বণ্ঠন করে নেবে। তারা ঝগড়া করলে আপনার দোষ হবে না। আপনি তাঁদেরকে ঝগড়া না করতে অসিয়ত করুন। কারো নামে কিছু লিখে না দিয়ে সব নিজের নামেই রাখুন। ৬১২ (ইবনে উষাইমীন)
মেয়েদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়া
আমার তিনটি মেয়ে, কোন ছেলে নেই। শুনেছি, আমার মৃত্যুর পর আমার মেয়েরা দুইয়ের তিন ভাগ সম্পত্তি পাবে এবং বাকী পাবে আমার ভাই। অথচ সে আমার ভাই হলেও, সে আমার দুশমন। আমি চাই না, সে আমার কোন সম্পত্তি পাক। এখন কি আমি আমার সব সম্পত্তি আমার মেয়েদের নামে লিখে দিতে পারি?
আপনার সম্পত্তি কে পাবে, আর কে পাবে না, তাতে আপনার ইচ্ছা নেই। সে ইচ্ছা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্র। আর বিধানে সে যা পাবে, তাতে বাদ সাধবার অধিকার আপনার নেই। মহান আল্লাহ মীরাসের ভাগ বণ্ঠনের বিধান দেওয়ার পর বলেছেন,
“এসব আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমা। আর যে আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত হয়ে চলবে, আল্লাহ তাকে বেহেশেত স্থান দান করবেন; যার নীচে নদী সমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং এ মহা সাফল্য। পক্ষান্তরে যে আল্লাহ ও তার রাসুলের অবাধ্য হবে এবং তার নির্ধারিত সীমা লংঘন করবে, তিনি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে সে চিরকাল থাকবে, আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা দায়ক শাস্তি।” (নিসাঃ ১৩-১৪)
সুতরাং আপনার ভাই আপনার দুশমন হলেও আল্লাহ্র ইচ্ছায় সে আপনার সম্পত্তির ভাগ পাবে। অবশ্য সে যদি কাফের বা মুশরিক হয়, তাহলে সে আল্লাহর বিধানে মুসলিমের নিকট থেকে কোন অংশ পাবে না। ৬১৩ (ইবনে উষাইমীন)
****************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url