সূরা আল-ফালাক তেলাওয়াত ও উচ্চারণ || সূরা আল-ফালাক শানে নুযূল ও অনুবাদ ||
সূরা আল-ফালাক তেলাওয়াত মিশরী আল ফাসী
১১৩ সূরাঃ আল-ফালাক Al-Falaq سورة الفلق আয়াতঃ ৫ মাক্কী
সূরা আল ফালাকের শানে নুযূল
সূরা ফালাক ও পরবর্তী সূরা নাস একই সাথে একই ঘটনায় অবতীর্ণ হয়েছে। ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রাহেমাহুল্লাহ উভয় সূরার তাফসীর একত্রে লিখেছেন। তাতে বলেছেন যে, এ সূরাদ্বয়ের উপকারিতা ও কল্যাণ অপরিসীম এবং মানুষের জন্যে এ দু'টি সূরার প্রয়োজন অত্যধিক। বদনজর এবং সমস্ত দৈহিক ও আত্মিক অনিষ্ট দূর করায় এ সূরাদ্বয়ের কার্যকারিতা অনেক। বলতে গেলে মানুষের জন্যে শ্বাসপ্রশ্বাস, পানাহার ও পোষাক-পরিচ্ছদ যতটুকু প্রয়োজনীয়, এ সূরাদ্বয় তার চেয়ে বেশী প্রয়োজনীয়। সূরা ফালাক-এ দুনিয়াবী বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে সূরা আন-নাসে আখেরাতের আপদ ও মুসীবত থেকে আশ্রয় প্রার্থনার প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। নির্ভরযোগ্য হাদীসসমূহে এ সূরা এবং সূরা আন-নাস উভয় সূরার অনেক ফযীলতা ও বরকত বর্ণিত আছে। উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা লক্ষ্য করেছ কি, আদ্য রাত্ৰিতে আল্লাহ তা’আলা আমার প্রতি এমন আয়াত নাযিল করেছেন, যার সমতুল্য আয়াত দেখা যায় না; অর্থাৎ (قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) ও (قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ) আয়াতসমূহ। [মুসলিমঃ ৮১৪] অন্য বর্ণনায় আছে, তাওরাত, ইঞ্জিল, যবূর এবং কুরআনেও অনুরূপ অন্য কোন সূরা নেই। [মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৪৮, ১৫৮–১৫৯] এক সফরে রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করালেন, অতঃপর মাগরিবের সালাতে এ সূরাদ্বয়ই তেলাওয়াত করে বললেনঃ এই সূরাদ্বয় নিদ্ৰা যাওয়ার সময় এবং নিদ্রা থেকে গাত্ৰোত্থানের সময়ও পাঠ করো। [আবু দাউদ: ১৪৬২, মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৪৮]
অন্য হাদীসে তিনি প্রত্যেক সালাতের পর সূরাদ্বয় পাঠ করার আদেশ করেছেন। [আবু দাউদ: ১৫২৩ তিরমিযী: ২৯০৩, নাসায়ী: ১৩৩৬, মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৫৫] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন রোগে আক্রান্ত হলে এই সূরাদ্বয় পাঠ করে হাতে ফুঁক দিয়ে সর্বঙ্গে বুলিয়ে দিতেন। ইন্তেকালের পূর্বে যখন তাঁর রোগযন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়, তখন আমি এই সূরাদ্বয় পাঠ করে তার হাতে ফুঁক দিতাম। অতঃপর তিনি নিজে তা সর্বাঙ্গে বুলিয়ে নিতেন। আমার হাত তাঁর পবিত্ৰ হাতের বিকল্প হতে পারতনা। তাই আমি এরূপ করতাম। [বুখারী: ৫০১৬, মুসলিম: ২১৯২] উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি কি সূরা ইউসুফ ও সূরা হূদ থেকে পড়ব? তিনি বললেন, ‘বরং তুমি কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক দিয়ে পড়। কেননা, তুমি এর চেয়ে আল্লাহর নিকট প্রিয় ও অধিক অর্থপূর্ণ আর কোন সূরা পড়তে পারবে না। যদি তুমি পার, তবে এ সূরা যেন তোমার থেকে কখনো ছুটে না যায়” [মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৫৪০] সারকথা এই যে, যাবতীয় বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম এই সূরাদ্বয়ের আমল করতেন।
সূরা আল ফালাকের উচ্চারণ ও অনুবাদ
১১৩:১ قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ الۡفَلَقِ
বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, আল-বায়ান
Say, "I seek refuge in the Lord of daybreak Sahih International
১১৩:২ مِنۡ شَرِّ مَا خَلَقَ
তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আল-বায়ান
From the evil of that which He created Sahih International
১১৩:৩ وَ مِنۡ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَ
আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, আল-বায়ান
And from the evil of darkness when it settles Sahih International
১১৩:৪ وَ مِنۡ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِی الۡعُقَدِ
আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে, আল-বায়ান
And from the evil of the blowers in knots Sahih International
১১৩:৫ وَ مِنۡ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ
আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’। আল-বায়ান
And from the evil of an envier when he envies." Sahih International
******************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url